১২টি স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর PDF ফাইল

4 Nov, 2023
১২টি স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর PDF ফাইল

১২টি স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর PDF ফাইল

১ নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন ১ দুলিতেছে তরি ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ, ছিঁড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার হিম্মৎ? কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।

ক. সব স্মৃতি মুছে দিতে কী উদ্যত?

খ. ‘ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কোন দিককে উন্মোচিত করেছে— ব্যাখ্যা করো ।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করেনি— মূল্যায়ন করো ।

১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. কালো হাত সব স্মৃতি মুছে দিতে উদ্যত।

খ. বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানকে সুকৌশলে আড়াল করার ব্যাপারটি বোঝাতেই কবি পক্তিটির অবতারণা করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের সেই স্মৃতিময় স্থানটির কোনো অস্তিত্ব এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। সেখানে এখন নানা রঙ-বেরঙের টুল-বেঞি, খেলনারাজি, আর চারিদিকে বাগান।

কবি মনে করেন, লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় নিংড়ানো স্বাধীনতা সংগ্রামের বাণী যেখান থেকে উচ্চারিত হয়েছিল সেই স্মৃতিময় স্থানটি কৌশলে ঢেকে দেওয়া হয়েছে । অশুভ শক্তির এ কৌশলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদই প্রকাশিত হয়েছে এ পঙ্ক্তিটির মাধ্যমে ।

উত্তরের সারবস্তু: বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানকে সুকৌশলে ঢেকে দেওয়ার ব্যাপারটি বোঝাতেই কবি পক্তিটির অবতারণা করেছেন ।

গ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’, কবিতার নেতার আগমনের প্রত্যাশায় লক্ষ লক্ষ মানুষের অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করার দিকটিকে উন্মোচিত করেছে।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাংলার মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠনিঃসৃত বক্তব্য শোনার জন্যে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে অপেক্ষা করছিল লক্ষ লক্ষ মানুষ।

তারা ব্যাকুল হয়ে বসেছিল তাদের প্রাণের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অপেক্ষায় । তারা স্বাধীনতার ভাষণ শুনতে এসেছিল । কারণ পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচার-নিপীড়নে তাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছিল ।

উদ্দীপকটিতে নেতৃত্বের অভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দিশেহারা অবস্থার কথা বর্ণিত হয়েছে। এখানে সাহসী কোনো মানুষকে এগিয়ে এসে এ প্রতিকূলতার নেতৃত্ব গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতাটিতে নেতৃত্বের অভাব নেই, বাঙালি জাতি তাদের দুরবস্থায় যোগ্য নেতা পেয়েছে।

কিন্তু সেই নেতার আগমন প্রত্যাশাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের ব্যাকুল প্রত্যাশার ক্ষণটির বর্ণনা কবিতাটিতে এসেছে । অন্যদিকে, উদ্দীপকে অনিশ্চিত কোনো নেতার আগমন প্রত্যাশার কথা ব্যক্ত হয়েছে। সুতরাং, উদ্দীপকটি আলোচ্য কবিতায় ব্যক্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব গ্রহণের জন্যে নেতার আগমন প্রত্যাশার দিকটিকে উন্মেচিত করেছে।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করেনি— উক্তিটি যথাযথ ।
“স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় অনেকগুলো বিষয় অভিব্যক্ত হয়েছে।

১৯৭১ এর ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ জনতার ব্যাকুল আগ্রহ। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসানের ব্যাপারটি এসেছে। অন্যদিকে, ৭৫ পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় আসা অশুভশক্তি কীভাবে সেই স্মৃতিময় স্থানটির স্মৃতি মুছে দিয়েছে কৌশলে সে ভাবটিও এসেছে।

উদ্দীপকে, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জনতার যোগ্য নেতৃত্বের প্রত্যাশা এসেছে। সাহসী কোনো নাবিক এসে ডুবে যাওয়া তরীর হাল ধরে তরীকে রক্ষা করবে সেই ভাবটিই এসেছে।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ একটি কবিতা। ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল মুহূর্ত এখানে এসেছে। লক্ষ লক্ষ উদ্দীপ্ত বিদ্রোহী জনতার সৈকত যে ক্ষণের জন্যে রেসকোর্স ময়দানে জড়ো হয়েছিল, সেই মাহেন্দ্রক্ষণের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বর্ণনা ও ভাব কবিতাটিতে এসেছে।

এসেছে বর্তমানে স্মৃতিবহুল সেই উদ্যানকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঢেকে দেওয়ার জন্যে উদ্যত কালো হাতের প্রসঙ্গ । কিন্তু উদ্দীপকে সেই কবিতার একটিই ভাব এসেছে যোগ্য নেতার জন্যে অপেক্ষা তবু এ ভাবটিও হুবহু আসেনি। সুতরাং, উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সমগ্র ভাবকে ধারণ করেনি, একথা প্রমাণিত।

২ নম্বর প্রশ্নে

১ম কবিতাংশ

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে

রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে

অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন ।

তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,

হৃদয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার

সকল দুয়ার খোলা। কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?

গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি;

‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

২য় কবিতাংশ

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা তোমাকে পাওয়ার জন্যে

আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?

আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন?

তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,

সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল,

সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর

তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,শহরের বুকে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক এলো,

দানবের মতো চিৎকার করতে করতে ।

ক. ২য় কবিতাংশের কবির নাম কী?

খ. ১ম কবিতাংশের কবিকে রবীন্দ্রনাথের সাথে তুলনা করার কারণ কী?

গ. ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় কবিতাংশ দুটির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করো ।

ঘ. ১ম কবিতাংশের জাগরণই ২য় কবিতাংশের উদ্ভবের কারণ। প্রমাণ করো ।

২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. দ্বিতীয় কবিতাংশের কবির নাম শামসুর রাহমান ।

খ. বাংলা কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা এবং বাঙালির স্বাধীনতার ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে সমান মহিমান্বিত করতেই প্রথম কবিতাংশে উল্লেখিত কবি অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

বাংলা কবিতা তথা সাহিত্য রবীন্দ্রনাথের অবদানে ঋদ্ধ। একক প্রচেষ্টায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমন বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে মর্যাদায় আসনে আসীন করেছেন, তেমনি প্রথম কবিতাংশে উল্লিখিত কবি অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুও শত বছরের পরাধীন জাতিকে মুক্তির দিক নির্দেশনা দেন। বাঙালির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর এ বিরাট ভূমিকায় দিকটিকে মহিমান্বিত করতে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তুলনা করেছেন কবি ।

উত্তরের সারবস্তু: বাংলা কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা এবং বাঙালির স্বাধীনতার ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে সমান মহিমান্বিত করতেই প্রথম কবিতাংশে উল্লিখিত কবি অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

গ. ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় উভয় কবিই দীর্ঘ শাসনের নাগপাশ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় প্রত্যাশী । ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ‘স্বাধীনতা’ অর্জনের জন্য উদ্দীপকের প্রথম কবিতাংশে যে জাগরণের কথা হয়েছে ২য় কবিতাংশে তারই প্রতিফলন ঘটেছে । বাঙালির স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার বিষয়টি উঠে এসেছে।

পাশাপাশি যুদ্ধের কারণে ত্যাগ-তিতিক্ষার বিষয়টি মূর্ত হয়েছে । উদ্দীপকের ১ম কবিতাংশে কবি নির্মলেন্দু গুণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা কীভাবে এল সে সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তিনি তাঁর কবিতায় দেখিয়েছেন বাঙালির দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা একবারে আসেনি।

বহুত্যাগ তিতিক্ষা, রক্তবন্যার বিনিময়ে বাংলার এই স্বাধীনতা এসেছিল। বঙ্গবন্ধুর ডাকে মানুষ সেদিন সাড়া দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করে পাকবাহিনীর অপশাসনের অবসান ঘটিয়ে মুক্ত হয় বাংলাদেশ। উদ্দীপকের দ্বিতীয় কবিতাংশে শামসুর রাহমানের একই ভাষ্য আমরা লক্ষ করি।

এ কবিতায়ও বাংলার স্বাধীনতা লাভের পিছনে এদেশের মানুষের ত্যাগ তিতিক্ষার কথা তুলে ধরেছেন। কত মা তার সন্তান হারালেন, কত স্ত্রী তার স্বামী হারালেন, কত ভাই তার বোনকে হারালেন— এই কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা লাভের জন্য। সুতরাং ‘স্বাধীনতা’ লাভের পেছনে এদেশের মানুষের আন্দোলন সংগ্রাম এ ত্যাগের দিকটি তুলে ধরার থেকে উভয় কবিতার সম্পৃক্ততা রয়েছে ।

ঘ. ‘প্রথম কবিতাংশের জাগরণই দ্বিতীয় কবিতাংশের উদ্ভবের কারণ’– উদ্দীপকের এ উক্তিটি যৌক্তিক।
“স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বর্ণিত ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে মানুষের মাঝে যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল তার উল্লেখ করা হয়েছে। এ জাগরণের কারণেই শুরু হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধ।

১ম কবিতাংশে বাঙালির অসহযোগ আন্দোলন ও দীর্ঘ সংগ্রামের পর স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ আসে মহান নেতার কাছ থেকে, যার নির্দেশনার প্রতিফলন ঘটেছে দ্বিতীয় কবিতাংশে।

উদ্দীপকের প্রথম কবিতাংশে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের উদ্বুদ্ধ করার জন্য ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আশাহত, ভ্রান্ত জনতাকে দিক নির্দেশনা দানের লক্ষ্যে গণমঞ্চ কাঁপিয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর অমর ভাষণ শোনান— ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

বাঙালিরা সেদিন বঙ্গবন্ধুর এ ডাক শুনে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভ করে। তাদের এই সংগ্রামী মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে শামসুর রাহমানের ‘তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায়। এ কবিতায় বাংলার স্বাধীনতা’র জন্য বাঙালির সংগ্রামী চেতনা ও ত্যাগের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।

সার্বিক দিক বিবেচনায় বলা যায়, উদ্দীপকের কবিতাংশের উভয় কবিই তাঁদের ভাবনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের কথা তুলে ধরেছেন।

যার প্রথম কবিতাংশে নির্মলেন্দু গুণ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্যে দিয়ে বাঙালিদের জাগরণের কথা তুলে ধরেছেন আর এ জাগরণের পরবর্তী ধাপ হলো দ্বিতীয় কবিতাংশের কাব্য ভাবনা, যেখানে প্রতিটি চরণে বাঙালির সংগ্রামী চেতনার দিকটি উৎসারিত হয়েছে।

৩ নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন ৩ ‘শেখ মুজিবুর রহমান যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার
শেখ মুজিবুর রহমান ।

ক. কবিরূপে কল্পনা করা হয়েছে কাকে?

খ. কবি শোনালেন তাঁর অমর কবিতাখানি’— ব্যাখ্যা করো ।

গ. উদ্দীপকের কবিতাংশের সঙ্গে তোমার পাঠ্য ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সাদৃশ্য তুলে ধরো ।

ঘ. উদ্দীপকে শেখ মুজিবুর রহমান-এর অবদান ও কীর্তি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো ।

৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কবিরূপে কল্পনা করা হয়েছে ।

খ. কবি নির্মলেন্দু গুণ ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণকে কবিতা আর তাঁকে ‘কবি’ হিসেবে কল্পনা করেছেন ।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রহমান। তাঁর সেই ভাষণে বাঙালি অনুপ্রাণিত হয়। প্রবল দেশপ্রেম আর দূরদর্শী শেখ মুজিবের ভাষণ ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ। কবি এজন্যে শেখ মুজিবের ভাষণকে অমর কবিতারূপে কল্পনা করেছেন ।

গ. উদ্দীপকের কবিতার সঙ্গে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার ভাবগত দিক থেকে সাদৃশ্য আছে।বাংলার স্বাধীনতার জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ডাকে সারা বাংলার মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

তাঁর এ কীর্তি কবি মনে রেখেছেন । তাঁকে নিয়ে লেখা কবিতায়ও তিনি তাঁর অবদানের কথা স্মরণ করেছেন। উদ্দীপকের কবিতাংশের কবিতায়ও তাঁকে স্মরণ করা হয়েছে। এদিক থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে কবিতার সাদৃশ্য বিদ্যমান।

শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দূরদর্শী নেতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর ডাকেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল জাতি। যার ফলে এসেছিল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা । উদ্দীপকে বলা হয়েছে, যতদিন বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে ততদিন বাঙালির মনে শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকবেন।

উদ্দীপকে কবির এ বক্তব্যের মিল পাই ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায়। এ কবিতায় কবি শেখ মুজিবুর রহমানকে মনে ধারণ করেছেন, তাঁকে নিয়েও কবিতা লিখেছেন । শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবেসেছেন উদ্দীপকের রচয়িতা। তাই ভাবগত দিক থেকে উভয় কবিতায় মিল রয়েছে ।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকে কবি শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেছেন এবং বলেছেন তাঁর অমরত্বের কথা। মূল কবিতায়ও কবি শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন । এদিক থেকে উভয়ের মধ্যে ভাবগত মিল লক্ষ করা যায় ।

ঘ. শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান ও কীর্তি চিরকালীন ভক্তি ও গৌরবের, যা উদ্দীপক ও আলোচ্য উদ্দীপক, উভয় ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ।
বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণ তাই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এ ভাষণের গুরুত্ব কবি তুলে ধরেছেন তাঁর কবিতায় ।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার ডাক দেন শেখ মুজিব। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালিরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করে । বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে যে স্বাধীনতা তিনি দেশকে দিয়েছেন, তা বাঙালির হৃদয়ে চিরকাল জীবিত থাকবে।

See also  স্বাধীনতা শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো কবিতার মূলভাব pdf ডাউনলোড

যতদিন স্বাধীন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন তাঁর এ কীর্তি অমর হয়ে থাকবে। কবির এ বক্তব্যের সঙ্গে উদ্দীপকের বক্তব্যের মিল রয়েছে।

পরাধীন বাংলাদেশকে স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছেন শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে দূরদর্শী নেতার ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। তাঁর এ অবদান প্রতিটি বাঙালি মনে রাখবে।

তিনি বেঁচে থাকবেন প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। কবিতায় নির্মলেন্দু গুণ শেখ মুজিবকে তাঁর অবদান ও কীর্তির কারণে গভীরভাবে স্মরণ করেছেন। উদ্দীপকে কবিতাংশেও এ বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। যত দিন পদ্মা, মেঘনা বহমান থাকবে, ততদিন শেখ মুজিব আমাদের হৃদয়ে ভাস্বর হয়ে থাকবেন ।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপক ও কবিতা উভয় স্থানেই শেখ মুজিবের কীর্তিকে স্মরণ করা হয়েছে। যতদিন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বহমান থাকৱে ততদিন বাঙালির হৃদয়ে অম্লান থাকবে শেখ মুজিবের নাম ।

৪ নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন। ৪ “শিল্পী, কবি, দেশী কি বিদেশী সাংবাদিক খদ্দের, শ্রমিক, ছাত্র,

বুদ্ধিজীবী, সমাজসেবিকা, সবাই এলেন ছুটে,

পল্টনের মাঠে, শুনবেন দুর্গত এলাকা প্রত্যাগত বৃদ্ধ মৌলানা ভাসানী

কী বলেন । রৌদ্রালোকে দাঁড়ালেন তিনি দৃঢ়, ঋজু,

শোনালেন কিছু কথা, যেন নেতা নন,

অলৌকিক স্টাফ রিপোর্টার।”

ক. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতাটি কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত?

খ. ‘মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

গ. ত্র: সফেদ পাঞ্জাবি উদ্ধৃত কবিতাংশে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে তা ব্যাখ্যা করো ।

ঘ. উদ্দীপকের মওলানা ভাসানী এবং নির্মলেন্দু গুণের ‘কবি’ একসূত্রে গাঁথা— বিশ্লেষণ করো।

৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতাটি ‘চাষাভুষার কাব্য’ নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত ।

খ. ‘মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ’ বলতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এদেশে যে অশুভ শক্তির উত্থান ঘটেছে তাকে বোঝানো হয়েছে ।
বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ঘোষণা দিয়েছিলেন ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ । মার্চ মাসের এ ঘোষণার মধ্যে স্বাধীনতার বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল ।

কিন্তু ইতিহাসের পট পরিবর্তনে এ সত্যকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা চলেছে দীর্ঘদিন। এ অশুভ শক্তি যাবতীয় ইতিবাচক ভাবনা, সৌন্দর্য ও কল্যাণকে সমাহিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কবি ‘মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ’ উপমার মধ্য দিয়ে শুভ শক্তির বিরুদ্ধে অশুভ শক্তির এ প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে ইঙ্গিত করেছেন ।

উত্তরের সারবস্তু: ‘মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ” বলতে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এদেশে যে অশুভ শক্তির উত্থান ঘটেছে তাকে বোঝানো হয়েছে ।

গ.  উদ্ধৃত কবিতাংশে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় উল্লিখিত কবির জন্যে বিপুল জনতার প্রতীক্ষার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। নির্মলেন্দু গুণ-এর ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত শ্রোতার ব্যাকুল প্রতীক্ষা ছিল কবির কণ্ঠে অমর কবিতার বাণী শোনার জন্যে ।

এ কবি বাঙালির স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর কণ্ঠে ধ্বনিত স্বাধীনতা সংগ্রামের আহ্বানই ‘অমর কবিতা’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এখানে ।

আলোচ্য কবিতায় বঙ্গবন্ধুর প্রতীক্ষায় লক্ষ লক্ষ বিদ্রোহী শ্রোতার ভোর থেকে উৎকণ্ঠিত প্রতীক্ষার কথা বলা হয়েছে। শ্রমিক, কৃষক ইত্যাদি নানা শ্রেণি- পেশার মানুষ, নারী, বৃদ্ধ, শিশুসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতীক্ষা ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঘোষণা শোনার জন্যে ।

উদ্দীপকেও সাদৃশ্যপূর্ণ একটি চিত্রকল্প তুলে ধরা হয়েছে। এখানে মওলানা ভাসানীর বক্তব্য শোনার জন্যে সর্বস্তরের মানুষের প্রতীক্ষার মধ্যে আলোচ্য কবিতায় রূপায়িত প্রতীক্ষার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে ।

ঘ. উদ্দীপকের মওলানা ভাসানী এবং নির্মলেন্দু গুণের ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় উল্লিখিত ‘কবি’ গণমানুষের নেতা হিসেবে একসূত্রে গাঁথা !

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় উল্লিখিত কবি গণমানুষের অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ঘোষণা শোনার জন্যে এদেশের সর্বস্তরের লক্ষ লক্ষ মানুষ ভোর থেকে প্রতীক্ষা করেছিল জনসমুদ্রের উদ্যানরূপী রেসকোর্স ময়দানে ।

বঙ্গবন্ধুর জন্যে জনতার এ প্রতীক্ষার সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে উদ্দীপকের। উদ্দীপকের মওলানা ভাসানীর জন্যে জনতার প্রতীক্ষাও এ কবিতাটিকে স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় ক্ষেত্রেই প্রাণপ্রিয় নেতার জন্যে অধীর জনতার প্রতীক্ষা চিত্রিত হয়েছে অনন্য কাব্যভাষ্যে ।

উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতার বিশ্লেষণে বলা যায়, উভয় ক্ষেত্রেই গণমানুষের নেতার প্রতি জনতার অধীর প্রতীক্ষা রূপায়িত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠে স্বাধীনতা সংগ্রামের ঘোষণা ব্যক্ত হয়েছিল।

উদ্দীপকের নেতার কণ্ঠেও অলৌকিক স্টাফ রিপোর্টারের মতো অশ্রুতপূর্ব বাণী শোনার জন্যে প্রতীক্ষা ছিল সর্বস্তরের মানুষের । এ সাদৃশ্যই মওলানা ভাসানী এবং আলোচ্য কবিতায় উল্লিখিত কবিকে একসূত্রে গেঁথেছে ।

৫ নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন ৫ কবিতায় কতটুকু বলা যায়

একটি একাগ্র কণ্ঠধ্বনি

ধ্বনিময় বঙ্গোপসাগর

জয় বাংলার ধ্বনি রব

মরি-বাঁচি গাঢ় অঙ্গীকার।

ক. ‘কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী’— উদ্ধৃতিতে যাঁর কথা বলা হয়েছে তিনি কে?

খ. ‘ফুলের বাগানে ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

গ. ‘একটি একাগ্র কণ্ঠধ্বনি ধ্বনিময় বঙ্গোপসাগর’— উদ্দীপকের এ চরণ দুটির সঙ্গে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা করো ।

ঘ. “উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার মূলভাবকে পুরোপুরি ধারণ করে না” – মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো ।

৫ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক ‘কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী’ উদ্ধৃতিতে যার কথা বলা হয়েছে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ।

খ. উদ্ধৃতাংশ দ্বারা বোঝানো হয়েছে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দিয়েছিলেন তা এখন ফুলের বাগান, শিশু পার্ক ইত্যাদির মাধ্যমে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

১৯৭১ সালে বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, শিশু পার্ক, রমনা উদ্যান মিলে একটি মাঠ ছিল, যার নাম ছিল রেসকোর্স ময়দান। বর্তমানে এ মাঠটি নানাভাবে বিভক্ত। তাই কবি আক্ষেপ করে বলেছেন— …. ফুলের বাগানে ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হৃদয় মাঠখানি’তে একসময় লক্ষ মানুষের প্রাণের জোয়ার এসেছিল তাই কবি মাঠটিকে ঢাকার হৃদয় বলে আখ্যায়িত করেছেন।

উত্তরের সারবস্তু: ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা আজ বিভিন্ন স্থাপনার মাধ্যমে ঢেকে দেওয়া হয়েছে । আলোচ্য উক্তি দ্বারা তাই বোঝানো হয়েছে ।

গ. উদ্ধৃত উদ্দীপকের চরণের সঙ্গে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সাদৃশ্য আছে। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সাহসিকতা, সময় সচেতনতা, রাজনৈতিক পরিচয় আছে এ কবিতায়। কবিতার এ বিষয় উদ্দীপকে একইভাবে এসেছে।

উদ্দীপকের কবিতাংশে করি বলেছেন— “কবিতায় কতটুকু বলা যায়, একটি একাগ্র কণ্ঠধ্বনি, ধ্বনিময় বঙ্গোপসাগর’। ‘জয় বাংলা’ ধ্বনির যে সামগ্রিক চেতনা তা কবি কবিতার ভাষায় ধারণ করতে পারেননি। কবি প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন মরি আর বাঁচি ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি মুখে উচ্চারিত হবে।

উদ্দীপকের এ চরণের সাথে কবিতার ‘জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার/সকল দুয়ার খোলা,’ চরণের মিল আছে। উক্ত চরণে বলা হয়েছে প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতারূপী নৌকার পাল তুলে যখন ডাক দিলেন তখন জনসমুদ্রের নৌকায় লাগল হাওয়া, ছুটে চলল সেই স্বপ্নের তরী।

উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকে বর্ণিত ‘একটি একাগ্র কণ্ঠধ্বনি ধ্বনিময় বঙ্গোপসাগর’ চরণের সঙ্গে আলোচ্য কবিতার ‘জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার/সকল দুয়ার খোলা’ চরণের সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার মূলভাবকে পুরোপুরি ধারণ করে না— মন্তব্যটি যথাযথ । ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে বজ্রকণ্ঠে পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতার ডাক দেন । বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণে সূচিত হয়েছিল আমাদের মহান স্বাধীনতার সংগ্রামের স্বপ্ন ।

উদ্দীপকে কবি বলেছেন— সেই অমিয় বাণী ‘জয় বাংলা’ শুধু কবিতার ভাষায় ধারণ করা সম্ভব নয়। এ ধ্বনির বিস্তৃতি বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। বাঁচি আর মরি তবু এ অঙ্গীকার ধারণ করতে হবে ।

উদ্দীপকটি আলোচ্য কবিতার সমগ্র ভাবকে প্রকাশ করে নি বরং আংশিকভাব প্রকাশ করেছে। সেদিন কৃষক, শ্রমিক, মজুর, বুদ্ধিজীবী, শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ সকলেই সমবেত হয়েছিল সেই ময়দানে বঙ্গবন্ধুর মুখে আশার বাণী শোনার জন্যে।

কবি আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন সেই রেসকোর্স ময়দান আর নেই— শিশু পার্ক, ফুলের বাগান, রমনা উদ্যান, নানাভাবে বিভক্ত হয়েছে। সে দিনের সেই ঐতিহাসিক মঞ্চ থেকে বাঙালির অমর অজর প্রিয় শব্দ ‘স্বাধীনতা’ উচ্চারিত হয়েছিল । তিনি যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তা হলো—

‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

এবারে সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ।’

তাই বলা যায়, উদ্দীপটি কবিতার সমগ্র ভাব নয় বরং আংশিক ভাব প্রকাশ করেছে।

৬ নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন ৬. দীর্ঘ বছর শোষিত, বঞ্চিত ও অবহেলিত বাঙালি জাতির মুক্তির লক্ষ্যে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে ভাষণ দেন— ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এ ভাষণে অনুপ্রাণিত বাঙালিরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামে লিপ্ত হয়। কাজেই এ ভাষণ সাধারণ ভাষণ ছিল না, ছিল সাত কোটি মুক্তিকামী বাঙালির মুক্তির প্রেরণা ।

ক. বিদ্রোহী শ্রোতা কোন সৈকতে বসে আছে?

খ. ‘শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

গ. উদ্ধৃত উদ্দীপকের সাথে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার সাদৃশ্য বর্ণনা করো ।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার মর্মকথা।’— উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন করো।

৬ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. বিদ্রোহী শ্রোতা জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে বসে আছে ।

খ ‘শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প’ বলতে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দেওয়ার ঘটনাকে বোঝানো হয়েছে ।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বিকেলে ভাষণ দেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু। তাঁর এ ভাষণ লক্ষ লক্ষ মানুষ অধীর আগ্রহ নিয়ে শুনেছে। বঙ্গবন্ধুর এ ডাকে স্বাধীনতা রক্ষায় হাজারো মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়।

কবির কাছে এই বিকেল শ্রেষ্ঠ বিকেল বলে মনে হয়েছে। এখানে ‘শ্রেষ্ঠ বিকেল’ বলতে ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক বিকেলকেই বোঝানো হয়েছে।

উত্তরের সারবস্তু: ‘শ্রেষ্ঠ বিকেলের’ গল্প বলতে কবি ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক বিকেলে জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে বুঝিয়েছেন ।

গ. উদ্ধৃত উদ্দীপকের সঙ্গে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার বেশ কিছু সাদৃশ্য আছে ।
‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- এর সাহসিকতা, সময় সচেতনতা, রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচয় আছে এ কবিতায় । কবিতার এ বিষয় উদ্দীপকেও একইভাবে এসেছে ।

দীর্ঘকালের দুঃশাসনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে বাঙালির অবিসংবাদী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেন। তাঁর উপস্থিতিতে রেসকোর্স ময়দান জনসমুদ্রে পরিণত হয়। তাঁর ভাষণে সংগ্রামী চেতনা জাগ্রত হয় প্রত্যেক বাঙালির হৃদয়ে।

তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দেশকে শত্রুমুক্ত করে। প্রকৃতপক্ষে এটা ছিল মুক্তিকামী বাঙালির মুক্তির প্রেরণা। এ বিষয়টি উদ্দীপকের মতো ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায়ও প্রতীয়মান হয়েছে । আর এ বিষয়টিই উভয় অংশকে সাদৃশ্যপূর্ণ করে তুলেছে।

উত্তরের সারবস্তু: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ডাকে বাঙালিরা সংগ্রামী চেতনার উদ্দীপ্ত হয়ে স্বাধীনতার সূর্য আনতে উদ্যত হয় কবিতা ও উদ্দীপক উভয় স্থানেই এ সত্যটি প্রতিফলিত হয়েছে। এ বিষয়টিতেই কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য ঘটেছে।

ঘ. উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার মর্মকথা— উক্তিটি যথাযথ ও যুক্তিযুক্ত ।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। তাঁর এ ভাষণে সর্বস্তরের জনসাধারণের উপস্থিতি ছিল । তাঁর ভাষণ বাঙালির প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। যার দরুন বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিনিয়ে এনেছে মুক্তি ।

উদ্দীপক ও কবিতায় বলা হয়েছে, স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে রেসকোর্স ময়দানে জড়ো হয়েছিল জনসমুদ্র। বঙ্গবন্ধু দিশেহারা জাতিকে কী আশার বাণী শোনান তাই তাদের প্রতীক্ষা। অবশেষে তিনি বিদ্রোহে উত্তাল জনসাধারণকে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। শত্রুর মোকাবেলা করতে বলেন । তাঁর এ আহ্বানে সমগ্র জাতি অনুপ্রাণিত হয় ।

বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে বাঙালি যুদ্ধ করে স্বাধীন করে দেশ। কবি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় এ ভাষণকে মুক্তির প্রেরণা হিসেবে দেখেছেন । উদ্দীপকেও এ ভাষণকে মুক্তির প্রেরণা বলা হয়েছে। বহুকাল ধরে বাঙালি ও বাংলাদেশ পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি ছিল।

See also  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কি । ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এর ইতিহাস

এ শৃঙ্খলকে মুক্ত করতে শেখ মুজিবের ভাষণ বাঙালির প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। বাঙালির অস্তিত্বকে ধ্বংসের হাত থেকে ফিরিয়ে এনেছিল তাঁর স্বাধীনতার ডাক। তাই একে শুধু ভাষণ নয়, বাঙালির মুক্তির প্রেরণা বলাই অধিক যুক্তিযুক্ত। এ কথাই কবিতায় বলা হয়েছে এবং উদ্দীপকে তারই দ্যোতনা প্রকাশ পেয়েছে।

৭ নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন। ৭। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লক্ষ লোকের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন । ১৮ মিনিটের এ ভাষণে তিনি বাঙালির মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের আহ্বান জানান। আবেগে, বক্তব্যে, দিকনির্দেশনায় ঐ ভাষণটি ছিল অনবদ্য । বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণটিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের গেটিসবার্গ ভাষণের সঙ্গে তুলনা করা হয় ।

ক. নির্মলেন্দু গুণ কোন জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন?

খ. “উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

গ. উদ্ধৃত’ উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কোন দিকটিকে নির্দেশ করে? ব্যাখ্যা করো ।

ঘ. উদ্ধৃত উদ্দীপকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের গেটিসবার্গ ভাষণের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে । ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার আলোকে উক্তিটির তাৎপর্য নিরূপণ করো ।

৭ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. নির্মলেন্দু গুণ নেত্রকোনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন।

খ. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শুনতে রেসকোর্স ময়দানে অপেক্ষারত মুক্তিকামী শ্রোতাদের অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান থাকার বিষয়টিকে বোঝাতে চেয়েছেন।

পরাধীনতার নাগপাশে থাকতে থাকতে বাংলার মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছিল। জাতির এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্যে প্রয়োজন ছিল দিকনির্দেশনার। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্যেই অবিসংবাদী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তাঁর এ ভাষণের পূর্ব মুহূর্তে অপেক্ষারত জনসাধারণকে ‘উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা’ বলা হয়েছে ।

গ. উদ্ধৃত উদ্দীপকটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় শেখ মুজিবুর রহমানের অদম্য সাহসিকতা, সময় সচেতনতা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার দিকটিকে তুলে ধরেছে।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানে আপামর জনসাধারণের উপস্থিতিতে স্বাধীনতার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণামূলক ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের সংকটপূর্ণ অবস্থায় তাঁর ভাষণে জাগ্রত হয় বাংলার মানুষ । শেখ মুজিবের নেতৃত্বের এই অপূর্ব গুণ উদ্দীপকের পাশাপাশি কবিতাতেও লক্ষ করা যায় ।

শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার। দেশের সংকটময় মুহূর্তে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ দেশের স্বাধীনতা কামনায় তিনি ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। তাঁর এ ভাষণে বাংলার মানুষ হারানো পথের দিশা খুঁজে পায়।

তাঁর এ ভাষণ থেকে শক্তি অর্জন করে সংগ্রামী মানুষ। তাঁর ডাকে বাঙালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশকে স্বাধীন করে । কবিতায় শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শিতা, রাজনীতি সচেতনতার গুণটি সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন কবি।

উদ্দীপকেও এই মহান নেতার দৃঢ় নেতৃত্বের কথা বলা হয়েছে, যা ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার বিষয়কেই নির্দেশ করে । উত্তরের সারবস্তু: উদ্দীপকে কবির বক্তব্যে ফুটে উঠেছে শেখ মুজিবুর রহমান-এর রাজনীতি সচেতনতা, দূরদর্শিতা এবং দেশের প্রতি মমতা ।

এ ছাড়া তাঁর যোগ্য নেতৃত্বের কথাও এখানে সুস্পষ্ট। উদ্দীপকেও তাঁর যোগ্য নেতৃত্বের কথা বলা হয়েছে, যা উদ্দীপকে উদ্ধৃত নেতৃত্বের গুণকেই নির্দেশ করে ।

ঘ. জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামে ৭ই মার্চের ভাষণটির গুরত্ব বিবেচনায় এটিকে আব্রাহাম লিংকনের গেটিসবার্গ ভাষণের সঙ্গে তুলনা করা যুক্তিযুক্ত । জাতির দিকনির্দেশনাকারী এবং দূরদর্শী নেতা হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মনে ঠাঁই করে নিয়েছেন। কবি তাঁকে স্বাধীনতার রূপকার হিসেবে কাব্যে নিয়ে এসেছেন । উদ্দীপকে তাঁকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের সঙ্গে তুলনা হয়েছে।

উদ্দীপকের আব্রাহাম লিংকন ছিলেন আমেরিকার অবিসংবাদী নেতা। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছিল সমগ্র আমেরিকার মানুষ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা আব্রাহাম লিংকনের মতো। তাঁর ডাকে বাঙালিরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এক্ষেত্রে আব্রাহাম লিংকনের ভাষণের সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ সাদৃশ্যপূর্ণ।

দেশের সংকটাপন্ন সময় জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়ে দেশকে স্বাধীন করার মতো কাজ যোগ্য নেতার দ্বারাই সম্ভব। শেখ মুজিবুর রহমান তেমনি একজন নেতা। তাঁর হাত ধরে এসেছে স্বাধীনতা। তাঁর ভাষণে স্বাধীনতার বীজ সুপ্ত ছিল। সেই বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে যুদ্ধের মধ্য দিয়ে।

উদ্দীপকের আব্রাহাম লিংকনের ভাষণে আমেরিকার মানুষ যেমন নতুন পথের ঠিকানা পেয়েছিল, তেমনি শেখ মুজিবের ভাষণেও বাঙালির স্বাধীনতার সূর্য উঠেছিল । এদিক থেকে আমেরিকার আব্রাহাম লিংকনের ভাষণের মতো বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বিশ্বের ইতিহাসে তাৎপর্যপূর্ণ।

৮ নম্বর প্রশ্নে

প্রশ্ন ৮ ‘মুজিব মানে আর কিছু নয়

মুজিব মানে মুক্তি

পিতার সাথে সন্তানের ঐ

না লেখা প্রেম চুক্তি

মুজিব মানে শক্তি

গর্বিত শির বীর বাঙালির

চিরকালের ভক্তি।’

ক. . কোথায় শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণার ঐতিহাসিক ভাষণ দেন?

খ. ‘জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকত’— কথাটি ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের ‘মুজিব মানে মুক্তি’ কথাটি ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতাটির সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কিত? ব্যাখ্যা করো ।

ঘ. উদ্দীপকে ‘শেখ মুজিব বাঙালির চিরকালের ভক্তি ও গৌরবের’— ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার আলোকে উক্তিটি যাচাই করো ।

৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণার ঐতিহাসিক ভাষণ দেন।

খ. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় নির্মলেন্দু গুণ শেখ মুজিব-এর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে উপস্থিত জনগণকে জনসমুদ্রের উদ্যান রূপে কল্পনা করেছেন ।

১৯৭১ সালে বাঙালি জাতির পরাধীনতার গ্লানি দুঃসহ হয়ে ওঠে। দেশের এ সংকটময় মুহূর্তে জাতির দিকনির্দেশনায় এগিয়ে আসেন অবিসংবাদী নেতা শেখ মুজিব। তাঁর প্রতীক্ষায় লাখো মানুষ জমা হয় রেসকোর্স ময়দানে। কবি এ জনসমাগমকে ‘জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ।

উত্তরের সারবস্তু: জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকত বলতে কবি শেখ মুজিবের ভাষণে উপস্থিত লাখো জনতাকে বুঝিয়েছেন ।

গ. বাংলার মানুষের মুক্তির পথ নির্দেশক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কবির মতো উদ্দীপকেও এ বিষয়টির অবতারণা করা হয়েছে।

দিশেহারা বাঙালি জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়ে দুঃশাসনের নাগপাশ থেকে মুক্তিদান করেছেন শেখ মুজিব। কবি তাই কবিতার শেখ মুজিবকে মুক্তির নায়ক হিসেবে দেখেছেন । উদ্দীপকেও মুজিবকে মুক্তির প্রতীক বলা হয়েছে। এদিক থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে কবিতার মিল আছে।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর এ ভাষণ বাঙালির প্রেরণা যোগায়। বাঙালি আত্মমুক্তির যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

যার ফলে স্বাধীন হয় বাংলার মাটি। কবি তাই বাংলার মানুষের মুক্তির বাহক হিসেবে মুজিবকে তুলে ধরেছেন। উদ্দীপকেও মুজিবকে মুক্তির ধারক ও বাহক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে । এদিক থেকে উদ্দীপকটি কবিতার সঙ্গে সম্পর্কিত।

উত্তরের সারবস্তু: মূল কবিতা ও উদ্দীপক উভয় স্থানেই শেখ মুজিবের কীর্তিকে তুলে ধরা হয়েছে। মুজিবকে মুক্তির প্রতীক হিসেবে গণ্য করার মাঝে উদ্দীপকেও কবিতার সাদৃশ্য আছে।

ঘ. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবি নির্মলেন্দু গুণ শেখ মুজিবুর রহমানকে চিরকালের ভক্তি ও গৌরবের প্রতীক হিসেবে দেখেছেন । আলোচ্য উদ্দীপকেও এ ব্যাপারটি লক্ষ করা যায় ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই মহান নেতা যিনি জাতিকে মুক্তির স্বাদ দিয়েছেন। তাঁর বলিষ্ঠ প্রত্যয় ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কারণে বাঙালি স্বাধীন জাতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এ কারণে শেখ মুজিব আমাদের চিরকালের ভক্তি ও গৌরবের ।

শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেন । দেশ তখন সংকটময় পরিস্থিতিতে। এমন সময়ে তাঁর দিকনির্দেশনা জাতিকে নতুন দিগন্তের সন্ধান দেয় ।

তাঁর অনুপ্রেরণা প্রবাহিত হয় প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে । এ অনুপ্রেরণা বুকে ধারণ করে বাঙালি জাতি দেশ স্বাধীন করে । স্বাধীন দেশের রূপকার হিসেবে তাঁকে কবি চিরকালে ভক্তি ও গৌরবের মানুষ হিসেবে দেখেছেন উদ্দীপকের কবিতাংশের মতো ।

পৃথিবীতে যুগে যুগে অনেক মহান নেতা জন্মগ্রহণ করেন। দিশেহারা জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়ে তাঁরা কল্যাণ বয়ে আনেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে শেখ মুজিবুর রহমান সে কাজটিই করেছেন। ফলে এদেশ আজ স্বাধীন হয়েছে। এদিক থেকে তিনি চিরকালের ভক্তি ও গৌরবের পাত্র । উদ্দীপক এবং ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কবি তাই তাঁকে ভক্তি ও গৌরবের পাত্র হিসেবেই সম্মান জানিয়েছেন ।

৯ নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন ৯ সিমন নানা বাড়ি ঢাকায় বেড়াতে গেল । শুক্রবার ছুটির দিন নানু ওকে শিশুপার্কে বেড়াতে নিয়ে গেল। ঘুরে ঘুরে ওকে শিশুপার্ক দেখাল । সিমন নানুকে প্রশ্ন করল, এখানে অনেক আগে থেকেই কি পার্ক ছিল? নানু হেসে জবাব দিল, না এখানে আগে পার্ক ছিল না, এখানে দাঁড়িয়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার সেই ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। সিমন বলল, আমরা জানব কীভাবে যে এখানে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল? নানু বলল, এই ঐতিহাসিক স্থানটিতে পার্ক না করে স্বাধীনতার ঘোষণামঞ্চ বানালে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম স্বাধীনতার ঘোষণার ইতিহাস জানতে পারবে । এই ঘোষণার স্থানটিতে বাঙালির গৌরব ও অহংকার নিহিত আছে ।

ক. কবি নির্মলেন্দু গুণ কত সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান?

খ. কবি কেন বলেছেন, ‘সেদিনের সব স্মৃতি মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত কালো হাত’?

গ. উদ্দীপকে স্বাধীনতার ঘোষণার স্থানটির সংরক্ষণ বিষয়ে সিমনের নানুর সঙ্গে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কবির মনোভাবের কী ধরনের সাদৃশ্য আছে? ব্যাখ্যা করো ।

ঘ. ‘স্বাধীনতার ঘোষণার স্থানটিতে বাঙালির গৌরব ও অহংকার নিহিত’ আলোকে উদ্দীপকের উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।

৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. কবি নির্মলেন্দু গুণ ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান।

খ. ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ভাষণের স্থান, ঘটনা স্মৃতি মুছে দেওয়ার জন্যে যে অপশক্তির উদ্ভব হয়েছে, কবি তাই বোঝানোর জন্যে উক্ত কথাটি বলেছেন।

বর্তমান ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যে স্থানে বঙ্গবন্ধু ভাষণ দিয়েছিলেন, সেই স্মৃতিময় স্থানের কোনো অস্তিত্ব এখন আর নেই। বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর এদেশে অশুভ শক্তির যে উত্থান ঘটেছে, তাতে সেদিনের বিদ্রোহী ভাবনা, সৌন্দর্য ও স্বদেশের কল্যাণকে সমাহিত করার প্রয়াস চলছে।

তাই কবি মনে করেন লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় নিংড়ানো ‘স্বাধীনতা সংগ্রামের বাণী’ যেখান থেকে উচ্চারিত হয়েছিল সে স্মৃতিময় স্থানটি সুকৌশলে অদৃশ্য কালো হাতের অপচেষ্টায় ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

উত্তরের সারবস্তু: ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ভাষণের স্থান, ঘটনা স্মৃতি মুছে দেওয়ার জন্যে যে অপশক্তির উদ্ভব হয়েছে, কবি তাই বোঝানোর জন্যে উক্ত কথাটি বলেছেন ।

গ. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কবি শেখ মুজিব-এর ঘোষণার স্থানটি এবং এর পরিবেশ কেমন ছিল তা নতুন প্রজন্মকে জানাতে চেয়েছেন । উদ্দীপকে সিমনের নানুও একই প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন ।

শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের কথা বাঙালি সারাজীবন মনে রাখবে । কিন্তু যারা তা দেখেনি, শুধু শুনেছে, সেই নতুন প্রজন্মকে জানাতে হলে ঐতিহাসিক সেই জায়গাটির সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। কবির এ মতের সঙ্গে সিমনের নানুর মনোভাবের মিল আছে।

১৯৭১ সালে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁর ভাষণে ঐক্যবদ্ধ জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মুক্ত হয় আমাদের দেশ। এই ঐতিহাসিক ভাষণ এবং অবিসংবাদী নেতার কথা হয়তো নতুন প্রজন্ম শুনতে পাবে।

কিন্তু সেই স্থানের সংরক্ষণ হয়নি বলে তা তারা দেখতে পাবে না। তাই কবি চেয়েছেন নতুন প্রজন্ম যেন সেই জায়গাটি চেনে যেখানে ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। কবির এ মনোভাবের সঙ্গে সিমনের নানুর মনোভাবের মিল আছে। সিমনের নানু চেয়েছেন স্বাধীনতা ঘোষণার স্থানটি সংরক্ষিত থাকুক, যাতে নতুন প্রজন্ম সে জায়গাটি দেখলে সেই সময়কে অনুভব করতে পারে ।

ঘ. স্বাধীনতার ঘোষণার স্থানটি বাঙালির গৌরবে ও অহংকারে দীপ্তিময় । উদ্দীপকের মতো কবিতায়ও এ বিষয়টির প্রতিফলন ঘটেছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানতে হলে স্বাধীনতা ঘোষণার স্থানটিও সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। রেসকোর্স ময়দানে যেখানে বর্তমানে শিশুপার্ক সেখানে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন । তাই এ স্থানটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বাঙালির গৌরব ও অহংকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় কবির এ মনোভাব উদ্দীপকে সিমনের নানুর মাঝেও বিদ্যমান ।

See also  নবাব সিরাজ উদ দৌলার জীবনী । নবাব সিরাজ উদ দৌলার পরিচয় দাও

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন শেখ মুজিবুর রহমান। বর্তমানে যেখানে শিশুপার্ক সেখানে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। তাঁর ভাষণ ঐক্যবদ্ধ করেছিল সমগ্র জাতিকে। যার ফলে এসেছে এই স্বাধীন বাংলাদেশ। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের দিন সকাল থেকে জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ । ময়দানটি পরিণত হয় জনসমুদ্রে । স্বাধীনতার এ ভাষণই জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছে। স্বাধীনতার ভিত্তিভূমি যেখানে রচিত হয়েছিল, সেই ঘোষণার স্থানটিও বাঙালির গৌরবের ও অহংকারের।

পরাধীন জাতির জন্যে স্বাধীনতা স্বপ্নের মতো। আর এ স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর ডাকে। তাঁর অবদানের কথা জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। স্বাধীনতা ঘোষণায় স্থানটি রয়ে গেছে ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়ে।

সেসময় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা জাতীয় জীবনের তাৎপর্যময় এক অধ্যায় । ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কবির এ মনোভাব উদ্দীপকে সিমনের দাদুর মাঝেও প্রবাহিত হয়েছে। দু জনেই উক্ত স্থান সংরক্ষণের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর।

১০ নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন ১০ ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস। বিদ্যালয়ে আলোচনা সভা চলছে। ছাত্র-শিক্ষক সবাই স্বাধীনতার ঘোষণা বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছে। শেষে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মহোদয় বললেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে এদেশ স্বাধীন হতো কি না সন্দেহ। তাঁর তেজোদীপ্ত ও বজ্রকণ্ঠের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল । তাই স্বাধীনতার ইতিহাসে এ ভাষণটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ । স্বাধীনতা ঘোষণার ভাষণটি নতুন প্রজন্মের জানা আবশ্যক ।

ক. কবি নির্মলেন্দু গুণ পেশায় কী ছিলেন?

খ. গণসূর্যের মঞ্জু বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

গ. উদ্দীপকে সভাপতি মহোদয়ের বক্তব্য “স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কবির মনোভাবের সঙ্গে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ— ব্যাখ্যা করো।

ঘ. ‘স্বাধীনতা ঘোষণার ভাষণটি নতুন প্রজন্মের জানা আবশ্যক।’ ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার আলোকে উক্তিটির যথার্থতা যাচাই করো।

১০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

কবি নির্মলেন্দু গুণ পেশায় একজন সাংবাদিক ছিলেন।

খ. ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে যে মঞ্চ থেকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেন সেই মঞ্জুকে কবি ‘গণসূর্যের মঞ’ বলেছেন । বঙ্গবন্ধু ছিলেন জনগণের নেতা, যাঁর তেজোদীপ্ত দ্যুতির বিচ্ছুরণ ঘটেছিল চারদিকে। তাই তাঁকে গণসূর্য ভেবেছেন কবি। আর গণসূর্যের নেতা যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাষণ দেন তাতো গণসূর্যেরই মঞ্জু।

আর তাই কবি গণসূর্যের মঞ্জু বলতে রেসকোর্স ময়দানের সেই ঐতিহাসিক মঞ্চকেই বুঝিয়েছেন । উত্তরের সারবস্তু: ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে যে মঞ্চ থেকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা করেন সেই মঞ্জুকে কবি ‘গণসূর্যের মঞ’ বলেছেন ।

গ. বাংলাদেশের স্বাধীনতার রূপকার শেখ মুজিবুর রহমান— এ মনোভাবের দিক থেকে কবির মনোভাব উদ্দীপকের সভাপতি মহোদয়ের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ । শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্যে।

তাঁর ভাষণে সাড়া দিয়ে মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের এই ভাষণ স্বাধীনতার ইতিহাসে ঐতিহাসিক অধ্যায় ।

বাংলাদেশ ঔপনিবেশিক শাসনে পিষ্ট হয়েছে কয়েক শ’ বছর। এর থেকে মুক্তি অর্জনের জন্যে বাঙালিরা পথ খুঁজতে থাকে। তাদের সঠিক পথ দেখাতে অবিসংবাদী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেন । তাঁর ভাষণে সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে স্বাধীন করে ।

এদেশ থেকে চিরদিনের মতো শাষকের কালো থাবা অপসারিত হয় । বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণ না হলে হয়তো স্বাধীনতার শক্তিই অর্জিত হতো না । উদ্দীপকে সভাপতি মহাশয়ের উক্ত কথাগুলো কবির কবিতায়ও প্রতিফলিত হয়েছে। এদিক থেকে উভয়ের মনোভাবের সাদৃশ্য রয়েছে।

য. স্বাধীনতার ঘোষণার ভাষণটি নতুন প্রজন্মের জানা আবশ্যক, উদ্দীপক ও ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার আলোকে উক্তিটি যথার্থ ।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণটির মধ্যে স্বাধীনতার বীজ নিহিত ছিল। তরুণরা এ ভাষণ সম্পর্কে জানলেই কেবল স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে। এ ভাষণটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ । তাই কবি নতুন প্রজন্মকে জানাতে চেয়েছেন সেই ঐতিহাসিক ভাষণের কথা। উদ্দীপকেও সভাপতির মনোভাব এক্ষেত্রে কবির মনোভাবের সঙ্গে একাত্ম হয়েছে ।

স্বাধীনতা সংগ্রাম বাঙালির জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। দুঃশাসনের নিষ্পেষণে জাতি অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিল একাত্তরের। পরাধীন জাতির মুক্তির জন্যে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে এক অভূতপূর্ব ভাষণ দেন। বাঙালি জাতিকে অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার কথা ছিল সে ভাষণে।

সেই ভাষণে উদ্দীপ্ত হয়ে আপামর জনসাধারণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, ফলে মুক্ত হয় দেশ। তাই জাতীয় জীবনে এ ভাষণের গুরুত্ব অত্যধিক।

বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে। বাঙালি জাতির সংগ্রামী চেতনার কথা জানলে দেশের প্রতি তাদের মায়া-মমতা জন্ম নেবে। তারা শেখ মুজিবকে চিনবে এবং গৌরবান্বিত হবে। তাঁর ভাষণের গুরুত্ব বুঝলে তারা প্রতিবাদ করবে সকল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। নতুন প্রজন্ম এ ভাষণ দেখেনি, তাই ভাষণটি তাদের জানা আবশ্যক। তবেই তারা দেশের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে। কবির এ মনোভাব উদ্দীপকে সভাপতির মনোভাবের প্রতিরূপ ।

১১ নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন। ১১ শওকত সাহেব একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা। সেই সাথে তিনি ৭ই মার্চের ভাষণের একজন বিমুগ্ধ শ্রোতা। তাই তিনি যতবারই রমনা শিশু পার্কের পাশ দিয়ে যান ততবারই তাঁর মনে পড়ে যায় সেই আশ্চর্য সুন্দর বিকেলটির কথা। যে বিকেলে লক্ষ লক্ষ মানুষ জমায়েত হয়েছিল মহান নেতার বজ্রকণ্ঠের বাণী শোনার জন্য । বিকেলটি ছিল শ্রেষ্ঠ এক বিকেল । এরপর ওরকম আশ্চর্য সময় আসেনি আর কখনো ।

ক. সূর্য সেনের নেতৃত্বে ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র যুদ্ধ হয় কোথায়?

খ. ‘একটি কবিতা পড়া হবে’ কথাটি কেন বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো ।

গ. উদ্দীপকের মধ্যে ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার কোন বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো ।

ঘ. উদ্দীপকের ‘শ্রেষ্ঠ বিকেল’ ও নির্মলেন্দু গুণের ‘শ্রেষ্ঠ বিকেল’ যেন একই ইতিহাসের সাক্ষী— মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো।

১১ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক. সূর্য সেনের নেতৃত্বে ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র যুদ্ধ হয় চট্টগ্রামে।

খ. বঙ্গবন্ধু তাঁর ৭ই মার্চের ভাষণে বাঙালির আকাঙ্ক্ষিত মুক্তির কথা কবিতার মতো শিল্পিত করে ব্যক্ত করেছিলেন বলেই প্রশ্নোক্ত উক্তিটি করা হয়েছে ।

কবিতায় যেমন থাকে অব্যক্তের ইঙ্গিত তেমনি শিল্পিত ভাষায় তাতে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্যদিয়ে শত বছরের পরাধীন জাতির মুক্তির কথা উচ্চারিত হয়েছিল অপূর্ব শিল্প-সুষমায় । তাই কবি এ ভাষণকে কবিতার সঙ্গে তুলনা করে ‘একটি কবিতা পড়া হবে’ বলা হয়েছে ।

গ. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় উল্লেখিত শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্পের দিকটি উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে । ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বিকেল বাঙালির জাতীয় জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

কারণ এ বিকেলে বাঙালি শুনেছে চির আকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতার ঘোষণা। এই বিকেলে বাঙালি স্বাধীনতার প্রথম শিহরণ অনুভব করে তেজোদীপ্ত কণ্ঠের সেই ভাষণ বাঙালিকে স্বাধীনতার অর্জনের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন । যার জন্যে বাঙালি স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে ওঠে।

উদ্দীপকে শওকত সাহেব স্মৃতিচারণ করেছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তিনি রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাক শুনেছিলেন। ফলে সে সময়টা তার কাছে এক আশ্চর্য মহিমান্বিত সময় হিসেবে বিবেচিত। ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায়ও সেই আশ্চর্য বিকেলের কথা পাওয়া যায়।

প্রিয় নেতার ভাষণ শোনার জন্য সেই বিকেলে লক্ষ লক্ষ মানুষ জমায়েত হয়েছিল । অর্থাৎ ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার এ দিকটিই উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ ।

উত্তরের সারবস্তু: তেজোদীপ্ত কণ্ঠের সেই ভাষণ বাঙালিকে স্বাধীনতার অর্জনের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রিয় নেতার ভাষণ শোনার জন্য সেই বিকেলে লক্ষ লক্ষ মানুষ জমায়েত হয়েছিল । অর্থাৎ ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার এ দিকটিই উদ্দীপকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. উদ্দীপকের ‘শ্রেষ্ঠ বিকেল’ এবং ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার শ্রেষ্ঠ বিকেল মূলত ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বিকেলের কথা— যা একই ইতিহাসকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয় স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের। কিন্তু শুরু থেকেই পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী এ দেশের মানুষের ওপর অমানবিক অত্যাচার আর শোষণ চালাত।

অবশেষে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাঙালি তাদের নেতার কাছে স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে । উদ্দীপকের শওকত সাহেব একজন মুক্তিযোদ্ধা।

তিনি ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ভাষণ শুনেছিলেন। এরপর তিনি দেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। যুদ্ধে দেশ স্বাধীন হয়েছে। এখনও শওকত সাহেব সেই ঘটনাকে ভুলতে পারেন না । লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত হওয়া সেই বিকেল এখনো তার কাছে শ্রেষ্ঠ বিকেল হিসেবে বিবেচিত।

“স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায়ও ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক বিকেলের বর্ণনা পাওয়া যায়। এ বিকেলে বাংলার মানুষ তাদের প্রিয় নেতার মুখে যে ভাষণ শুনেছেন, সে ভাষণ কবিতার মতো তাৎপর্যপূর্ণ।

এ কবিতা বাঙালির জাতীয় চেতনায় সর্বপ্রধান ভূমিকা পালন করেছে। তাই কবিতায় এ বিকেলকে শ্রেষ্ঠ বিকেল হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মূলত উদ্দীপকে এবং ‘কবিতায় শ্রেষ্ঠ’ বিকেল বলতে একই ইতিহাসকে বুঝানো হয়েছে।

১২  নম্বর প্রশ্ন

প্রশ্ন ১২ আপামর জনতার সামনে যিনি সেদিন এসে দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় মানুষ। বাঙালির শেকড় থেকে জেগে ওঠা এক বিদ্রোহী নেতা। তিনি কোনো সাধারণ রাজনীতিবিদ নন। তিনি একজন কবি, রাজনীতির কবি। তিনি সেদিন বিকেলে পড়ন্ত রোদে ডাক দিয়েছিলেন—

‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

ক. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় সেদিন বলতে কোন দিনের কথা বলা হয়েছে?

খ. বঙ্গবন্ধুকে কেন রাজনীতির কবি বলা হয়েছে?

গ. ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার আলোকে উদ্দীপকের বর্ণিত বিদ্রোহী নেতার ব্যক্তিত্বের চিত্র অঙ্কন করো ।

ঘ. তোমর পঠিত কবিতা অনুসারে উদ্দীপকের শেষোক্ত চরণ দুটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

১২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর

ক.  ‘স্বাধীনতা এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় সেদিন বলতে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের কথা বলা বলা হয়েছে ।

খ.  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দূরদর্শী রাজনৈতিক কৌশল ও সুদক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন বলে তাঁকে রাজনীতির কবি বলা হয় ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির জন্যে অসহনীয় নির্যাতন সহ্য করেছেন। পাকিস্তানিদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে তিনি দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছেন, জেল খেটেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন । তাঁর ঘোষণার মাধ্যমেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হয়েছে।

উত্তরের সারবস্তু: বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় সাহসী কণ্ঠের ওপর ভিত্তি করে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জিত হয় বলে তাঁকে রাজনীতির কবি বলা হয়।

গ. নির্মলেন্দু গুণ-এর ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর যে দক্ষ নেতৃত্বের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে, উদ্দীপকেও সেই একই বিষয় প্রকাশিত হয়েছে।

উদ্দীপকের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর চিত্রই স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। তাঁর জীবনে নির্যাতন-নিপীড়ন এসেছে। কিন্তু তিনি পিছপা হননি। শত্রুর ভয়ে তিনি না দমে জাতির মুক্তির জন্যে সাহসের সঙ্গে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে লড়েছেন। জীবনের মায়া তুচ্ছ করে জাতির ক্রান্তিলগ্নে তাঁর পথ চলা যেন একজন সাহসী মানুষের শ্রেষ্ঠ পদক্ষেপ ।

আপোসহীন এই নেতা সারাজীবন নিজে নির্যাতন সহ্য করলেও তাঁকে পরাজয় বরণ করতে আমরা দেখিনি। কবিতার মতো উদ্দীপকেও সাহসী ভূমিকার চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে।

তিনি বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তান। রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে তিনি হেঁটে যান মানুষের মাঝে। সকলের মধ্যমণি হয়ে একজন ব্যক্তি সেদিন সাড়ে সাত কোটি মানুষের অন্তরের কথা তুলে ধরেছেন। উদ্দীপকের আলোকে তাই এ কথা বলা যায়, উক্ত কবিতায় বঙ্গবন্ধুর সে দৃঢ় ব্যক্তিত্ব বিদ্রোহী চেতনার সঙ্গে ফুটে উঠেছে ।

ঘ. নির্মলেন্দু গুণ-এর ‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে স্বাধীনতার ঘোষণা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। উদ্দীপকেও একই বিষয়ের প্রতিফলন ঘটেছে ।

উদ্দীপকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৭ই মার্চের ভাষণের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রকাশ পেয়েছে। যার মূলবাণী আলোচ্য চরণদ্বয়ে বিদ্যমান । কবিতায়ও এই একই সুর ধ্বনিত হয়েছে। এদিক থেকে উভয়ের বক্তব্যের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায় ।

‘স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো’ কবিতার মধ্যে আমরা বঙ্গবন্ধুর প্রত্যয়দীপ্ত ভাষণের কথা শুনি, কণ্ঠের সংস্পর্শে এসে দেখি, কবির চব্বিশ বছরের শোষণ নিপীড়নে বাঙালি জাতি যখন নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে তখনই বঙ্গবন্ধু সকল নির্যাতন-নিপীড়ন উপেক্ষা করে বাঙালির সামনে স্বাধীনতার বাণী নিয়ে আসেন।

শোষকের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু সবসময়ই সোচ্চার ছিলেন। দাবি আদায়ের জন্যে ১৯৬৬ সালের ছয় দফার মাধ্যমে কিংবা ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ১৯৭০-এর নির্বাচনে জয় লাভ করেও ক্ষমতায় আসতে না পারার ক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা জাতি ।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তাই বঙ্গবন্ধু হাজারো মানুষের সামনে ঘোষণা করেন স্বাধীনতার মহান বাণী— ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম । এই বাণীর মধ্য দিয়েই মূলত স্বাধীনতা সংগ্রামের সূত্রপাত হয়েছিল ।

Rk Raihan

আমি আরকে রায়হান। আমাদের টার্গেট হল ইন্টারনেটকে শেখার জায়গা বানানো। আরকে রায়হান বিশ্বাস করেন যে জ্ঞান শুধুমাত্র শেয়ার করার জন্য তাই কেউ যদি প্রযুক্তি সম্পর্কে কিছু জানে এবং শেয়ার করতে চায় তাহলে আরকে রায়হান পরিবার তাকে সর্বদা স্বাগত জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Category