(অজানা তথ্য) টিয়া পাখি সম্পর্কে ১০টি বাক্য ছবি, পিকচার ও ফটো

1 Nov, 2023
(অজানা তথ্য) টিয়া পাখি সম্পর্কে ১০টি বাক্য ছবি, পিকচার ও ফটো

টিয়া পাখি সম্পর্কে ১০টি বাক্য – টিয়া পাখির ইংরেজি প্রতিশব্দ (parrots)। বাংলাদেশে যত প্রকার পাখি রয়েছে তার মধ্যে টিয়া পাখি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। টিয়া পাখির জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ হচ্ছে তার গায়ের বাহ্যিক টকটকে সবুজ রং যেটি সবার চোখে ফুটে উঠে।

টিয়া পাখিকে অনেকে সবুজ পাখি বলে ও সম্বোধন করে থাকে। এই পাখিদের একটি বৈজ্ঞানিক নাম আছে সেটি হচ্ছে- (Psittacula krameri)।

টিয়া পাখি প্রাণী জগতের কর্ডাটা পর্বের প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত। অনেকেই আছেন যারা পাখি পালন করতে খুব বেশি পছন্দ করেন। আমাদের দেশের বেশির ভাগ বাসা বাড়িগুলো লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে অনেকেই তাদের ছাদে, বারান্দায় অথবা খোলা জায়গায় টিয়া পাখি লালিত-পালিত করে থাকেন।

টিয়া পাখির বিশেষ একটি চরিএ হচ্ছে মানুষ যেভাবে তার সাথে কথা বলে সে ঠিক হুবহু সেইভাবে মানুষের সাথে কথা বলতে পারে। যা শুনতে মানুষের কাছে খুবই প্রিয় এবং মিষ্টি মনে হয়।

অনেকে মনে করে থাকেন টিয়া পাখিদের হয়তো ভোকাল কর্ড রয়েছে যার ফলে তারা মানুষের মতো কথা বলতে পারে। বিষয়টি আসলে তা নয়।

তারা তাদের গলার পেশি ব্যবহার করেই কথা বলে থাকে।টিয়া পাখির দেহের বাহ্যিক সৌন্দর্য্য এটাই জনপ্রিয় যে অনেক সময় লক্ষ্য গুলো দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের নাটক, সিনেমাতেও টিয়া পাখিকে অভিনয়ের কাজ হিসেবে যুক্ত করা হয়।

আপনি যদি টিয়া পাখি সম্পর্কে বেসিক কোন ধারণা লাভ করতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

চলুন তাহলে কথা না বাড়িয়ে টিয়া পাখি সম্পর্কে ১০ টি বাক্য জেনে নেওয়া যাক।

টিয়া পাখি সম্পর্কে ১০টি বাক্য:

১. টিয়া পাখির খাদ্য

টিয়া পাখির খাদ্য তালিকার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফল, লতা-পাতা, পএগুচ্ছ, বীজ ও ফল থেকে প্রাপ্ত মিষ্টি রস। এছাড়া টিয়া পাখিরা ধান ক্ষেতে যে ধরনের পাকা ধান পাওয়া যায় সেটি খেতেও তারা পছন্দ করে।

See also  ১২টি ১ টন ১.৫ টন ২ টন জেনারেল এসির দাম ২০২৩

২. টিয়া পাখির শারীরিক গঠন

টিয়া পাখির দেহের দৈর্ঘ্য ৪২ সেন্টিমিটার এবং এর ওজন ১৩০ গ্রাম হয়ে থাকে।এটের শরীরে অল্প কিছু পরিমাণে পালক থাকে এছাড়া সম্পূর্ণ দেহ টকটকে সবুজ রঙে রঙিন হয়ে থাকে।

টিয়া পাখির ঠোঁটের রং লাল বর্ণের হয়ে থাকে এবং ঠোঁটের সামনে দিকে কিছুটা তীরের মত বাঁকা হয়ে থাকে। চোখের রং সম্ভবত হলদে-সাদা টাইপের হয়ে থাকে।

ছেলে টিয়া পাখি এবং মেয়ে টিয়া পাখি চিনতে পারার উপায় আছে। যেমন- ছেলে টিয়া পাখির গলা এবং মেয়ে টিয়া পাখির গলায় দুটি ভিন্ন ধরনের দাগ থাকে। মেয়ে পাখির ঘাড়ের দিকে সবুজ রঙ দিয়ে ঘেরা থাকে। ছেলে পাখির গলা ও ঘাড়ের দিকে হালকা গোলাপি ভাব থাকে এবং থুতনির দিকে কালো রেখা থাকে।

৩. টিয়া পাখির স্বভাব

টিয়া পাখির স্বভাব অন্য সব পাখিদের তুলনায় কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। তাদেরকে অনেক সময় একা একা থাকতে দেখা যায়, আবার অনেক সময় জোড়ায় জোড়ায় থাকতেও দেখা যায়।

টিয়া পাখিদের মধ্যে যারা বড় দলে থাকতে চায় না তারা  ছোট ছোট দলে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আবার কিছু টিয়া পাখিরা আছে যারা একসাথে মিলে রাএিযাপন করে ও উচ্চস্বরে শব্দ করে ডাকতে ভালোবাসে।

৪. টিয়া পাখির বাসস্থান

টিয়া পাখি সাধারণত বন-জঙ্গল, যেসকল জায়গায় বৃক্ষ বেশি এমন এলাকা, প্রশস্ত পাতার বন, আর্দ্র পাতা ঝরানো বনাঞ্চল, খোলা বনাঞ্চল, পাহাড়ি এলাকার বনাঞ্চল, চা বাগান, বাসাবাড়ির বাগান, জমি ও পুরানো বাড়িতে বসবাস করে।

৫. টিয়া পাখির প্রজনন কাল

সাধারণত জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বছরের এই সাত মাস টিয়া পাখিদের প্রজননকালের প্রক্রিয়া চলে।এ সময় তারা কাঠঠোকরা পাখিদের পুরনো বাসায় প্রজনন কাজ সম্পন্ন করে। এমনকি দালানকোঠার যে সকল স্থানে ফাটল ধরে সেখানেও তারা প্রজনন কাজটি সম্পন্ন করে ডিম দিয়ে থাকে।

See also  (অজানা তথ্য) বেগম রোকেয়া সম্পর্কে ১০টি বাক্য জেনে নিন

৬. টিয়া পাখির বিলুপ্তির কারন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের একজন অধ্যাপক জানিয়েছেন- টিয়া পাখির বিলুপ্তির প্রধান কারণ হচ্ছে পরিবেশ ও প্রকৃতির কথা চিন্তা না করে মানুষ অতিরিক্ত পরিমাণে গাছপালা কেটে ফেলছে। যার ফলে টিয়া পাখিরা তাদের খাদ্য ও বাসস্থানের যোগান দিতে ব্যর্থ হয়ে আমাদের দেশ থেকে টিয়া পাখি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

৭. টিয়া পাখির উপকারিতা

টিয়া পাখির উপকারিতা বলতে এটি আমাদের বিনোদনমূলক সময় ব্যয় করতে খুবই উপকারে আসে। আজকাল মেক্সিমাম বাসা বাড়িগুলোতে এমনকি ছোট বাচ্চারাও টিয়া পাখি পালন করতে খুব বেশি পছন্দ করে।

টিয়া পাখি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনই কথা বলার ধরন তার থেকে আরও বেশি সুন্দর। মানুষ যখন টিয়া পাখির সাথে কথা বলার চেষ্টা করে তখন টিয়া পাখি হুবহু মানুষের মতো করে কথা বলা শিখে যায়।টিয়া পাখি মানুষকে অনুকরণ করে কথার উত্তর দেয় যা শুনতে সবার কাছে খুব ভালো লাগে এবং মন জুড়িয়ে যায়।

এ পাখি আমাদের কোন ক্ষতি করে না। টিয়া পাখি সবচেয়ে বড় যে উপকারটি করে সেটি হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দেয়। টিয়া পাখি যে পরিবেশে বা যেই গাছে বসে থাকে না কেন সেই পরিবেশটা যেন মনমুগ্ধকর হয়ে ওঠে।

৮. টিয়া পাখির প্রজাতি

টিয়া পাখি সাধারণত ছয়টি প্রজাতির হয়ে থাকে সেই ছয়টি প্রজাতির নাম গুলো হল-

  • চন্দনা টিয়া পাখি
  • মেটেমাথা টিয়া পাখি
  • বাসন্তী লটকন টিয়া পাখি
  • ফুল টিয়া পাখি
  • লাল মাথা টিয়া পাখি
  • সবুজ টিয়া পাখি

এই ছয়টি প্রজাতির টিয়া পাখির নাম শুনতে যেমন ভালো লাগে, পাখিগুলোকে বাস্তবে দেখলে আর অনেক বেশি ভালো লাগবে।

৯.টিয়া পাখি সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারনা

টিয়া পাখি সম্পর্কে মানুষের মধ্যে কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধারণা প্রচলিত আছে। যেমন- টিয়া পাখি ঘরে থাকলে শিশুদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ বাড়ে,টিয়া পাখি ঘরে লালন পালন করলে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ অশান্তি দূর হয়।

See also  মমতাজ মহল কে ছিলেন । মমতাজ মহলের পরিচয় দাও

এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যে লাভ হয়। টিয়া পাখি লালন পালন করার ফলে এই ধরনের কোন লাভ হয় না।  এগুলো সম্পূর্ণ কুসংস্কার ও ভুল ধারণা যা কিছু কিছু মানুষ ভেবে থাকে।

১০. টিয়া পাখি সম্পর্কে জীববিজ্ঞানীদের ধারনা

জীববিজ্ঞানীদের কাছে টিয়া পাখি সিট্টাসিনি  নামেও বিবেচিত। সিট্টাসিনি নানা প্রজাতির হয়ে থাকে। এই সকল সিট্টাসিনিকে ৮৬টি গোএে এবং ৩৭২টি প্রজাতিতে ভাগ করা হয়।

এদের কিছু প্রজাতিকে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে বসবাস করতে করতে দেখা যায়। দক্ষিণ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বেশি এই পাখির অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়।

সুতরাং বলা যায়, টিয়া পাখির মত এমন সুন্দর একটি প্রাণীর অস্তিত্ব আমাদের সমাজে টিকিয়ে রাখার জন্য সকলের উচিত টিয়া পাখির অস্তিত্ব রক্ষায় সর্বদা সতর্কতা মান্য করা এবং যারা পাখি শিকার করে পাখিদের অস্তিত্বের ক্ষতি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া।

Rk Raihan

আমি আরকে রায়হান। আমাদের টার্গেট হল ইন্টারনেটকে শেখার জায়গা বানানো। আরকে রায়হান বিশ্বাস করেন যে জ্ঞান শুধুমাত্র শেয়ার করার জন্য তাই কেউ যদি প্রযুক্তি সম্পর্কে কিছু জানে এবং শেয়ার করতে চায় তাহলে আরকে রায়হান পরিবার তাকে সর্বদা স্বাগত জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Category