- চড়ুই পাখি সম্পর্কে ১০টি বাক্য:
- ১/ চড়ুই পাখির খাবার
- ২/ চড়ুই পাখির উপকারিতা
- ৩/ চড়ুই পাখির বাসস্থান
- ৪/ চড়ুই পাখির শারীরিক গঠন
- ৫/ চড়ুই পাখির আবাসস্থল
- ৬/ চড়ুই পাখির প্রজাতির নাম
- বিভিন্ন প্রজাতির চড়ুই পাখির নাম গুলো হল-
- ৭/ চড়ুই পাখির প্রজননকাল
- ৮/ চড়ুই পাখির বিলুপ্তির কারণ
- ৯/ চড়ুই পাখি সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা
- ১০/ চড়ুই পাখির বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট
- Rk Raihan

চড়ুই পাখি সম্পর্কে ১০টি বাক্য – চড়ুই পাখি আমাদের দেশের অন্যান্য পাখির তুলনায় খুবই পরিচিত। এদের পূর্ব আবাসস্থল ছিল ইউরেশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশে।
বর্তমানে অ্যান্টার্কটিকা ব্যতীত পৃথিবীর সকল দেশেই এই পাখির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। আমাদের দেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলেই চড়ুই পাখির বসবাস দেখা যায়।
পৃথিবীতে সর্বমোট ৪৮ প্রজাতির চড়ুই পাখি রয়েছে। এর মধ্যে তারা ১১ টি ভাগে বিভক্ত। সাধারণত আমাদের দেশে পাতি চড়ুই এবং ইউরেশিয় চড়ুই পাখির অস্তিত্বই লক্ষ্য করা যায়।
আপনি যদি চড়ুই পাখি সম্পর্কে বিশেষ কোন তথ্য সংগ্রহ করতে চান তাহলে আমাদের এই পোস্টটিতে আপনি ভিজিট করতে পারেন। চলুন তাহলে দেরি না করে যে জেনে নেয়া যাক চড়ুই পাখি সম্পর্কে ১০টি বাক্য।
চড়ুই পাখি সম্পর্কে ১০টি বাক্য:
১/ চড়ুই পাখির খাবার
চড়ুই পাখির খাবারের কথা বিবেচনা করতে গেলে দেখা যায় যে তারা বিভিন্ন জিনিসের শস্য দানা, বীজ, বিভিন্ন ফল, ফুলের ডগা, পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ, ঘাসের ডগা খেয়ে থাকে। মাঝে মাঝে মানুষ যে ধরনের খাবার খায় সেগুলোর উছিস্ট অংশ খেয়ে থাকে।
২/ চড়ুই পাখির উপকারিতা
চড়ুই পাখি যেমন পরিবেশবান্ধব একটি পাখি তেমনি কৃষকদের জন্য এটি বেশ উপকারী। চড়ুই পাখি কৃষকদের খামারের কাজের ক্ষেত্রে বেশ উপকার করে। জমির পোকামাকড়, কীটপতঙ্গ খেয়ে জমির বিশেষ উপকার করে থাকে যার ফলে কৃষকদের জমিতে চাষ করার কাজটি আরো সহজ হয়ে ওঠে।
৩/ চড়ুই পাখির বাসস্থান
চড়ুই পাখি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় থাকতে খুব বেশি পছন্দ করে থাকে। তাই এদেরকে হাউস স্প্যারো বলা হয়ে থাকে অথবা এদের অন্য আরেকটি নাম হচ্ছে গৃহস্থলীর চড়াই।
৪/ চড়ুই পাখির শারীরিক গঠন
গবেষণা অনুযায়ী চড়ুই পাখির দেহের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে এবং সম্ভবত তাদের স্বাভাবিক ওজন বিশ গ্রাম। তাদের আলাদা করে দেখার অন্য একটি উপায় হচ্ছে তাদের মাথায় আকৃতির দিকে লক্ষ্য করা।
পুরুষ চড়ুই এবং স্ত্রী চড়ুই পাখি কিছুটা ভিন্ন রকম হয়ে থাকে। পুরুষ চড়ুইয়ের মাথা ধুসর এবং নীল রঙ মিশ্রিত থাকে এবং তাদের ঘাড়, পিঠ, পাখনা লাল-খয়েরী টাইপের হয়ে থাকে।
চোখের পেছন দিক থেকে ঘাড় পর্যন্ত মোটার মধ্যে গারো লালচে বাদামি রঙের এবং তাদের লেজের স্থানটি ধূসর টাইপের হয়ে থাকে। স্ত্রী চড়ুই পাখির রং কালচে এবং বাদামি রঙে মিশ্রিত হয়ে থাকে এবং পেটের দিক দিয়ে সাদা রঙের হয়।
৫/ চড়ুই পাখির আবাসস্থল
বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর যে সকল স্থানে চড়ুই পাখির বাসস্থান পাওয়া যায় সেই দেশগুলো হলো ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, জাপান, কোরিয়া, ইরান, ভুটান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, চীন, ইন্দোনেশিয়া ও মিয়ানমার।
চড়ুই পাখি জোড়া পাড়ে লাফিয়ে ঘাসের কীটপতঙ্গ খেয়ে ফেলে। এছাড়া তারা শহরের বিল্ডিংয়ের ছোটখাটো চিপাস্থানে, নদীর পাড়ে, মাঠের কাছে, ঝোপ-জঙ্গলে, গাছের উপরে ছোট ছোট ঘর বানিয়ে তারা দল বেধে বাস করে।
৬/ চড়ুই পাখির প্রজাতির নাম
যদিও আমরা জানি বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল।কিন্তু চড়ুই পাখি নামেরও যে একটি বিখ্যাত পাখি আছে এটি আমাদের অনেকের অজানা রয়ে যায়।
চড়ুই পাখির অনেকগুলো জাত রয়েছে। আমাদের দেশের মতো জনবসতিপূর্ণ দেশেও চড়ুই পাখির দুটি জাত রয়েছে। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য স্থান ভ্রমণ করলে দেখা যাবে
বিভিন্ন প্রজাতির চড়ুই পাখির নাম গুলো হল-
সং স্প্যারো: এদের গায়ের রং হালকা বাদামী রঙের হয়ে থাকে। এছাড়া ঠোট কিছুটা তীক্ষ্ণ টাইপের হয়। আমাদের দেশে সং স্প্যারো পাখি দেখা না গেলেও আমেরিকা এবং কানাডাতে এদের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এরা যে পরিবেশে থাকুক না কেন নিজেকে যেকোনো পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
হাউজ স্প্যারো: এই ধরনের পাখি গুলোকে আমেরিকা, কানাডা, এ মেক্সিকোর মত দেশে দেখতে পাওয়া যায়। এমনকি এরা মানুষের তৈরি বিভিন্ন ধরনের বিল্ডিং এ থাকতেও পছন্দ করে। এরা লোকাল এরিয়ায় নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।
ফিল্ড স্প্যারো: এদের নাম শুনলেই বোঝা যায় এরা হয়তো মাঠে থাকতে পছন্দ করে। এদেরকে আসলে সচরাচর মাঠের দিকে দেখা যায়। এদের শরীরের রং ধূসর কিন্তু অন্যান্য পাখির থেকে কিছুটা আলাদা হয়ে থাকে। এদের ডানার মধ্যে দাগ দাগ ভাব রয়েছে এবং এদের ঠোটের রং সাধারনত গোলাপি হয়। দিন দিন এই পাখিগুলো প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
ফক্স স্প্যারো: সাধারণত আমরা জানি ফক্স শব্দের অর্থ শিয়াল। ফক্স স্প্যারো নামটি শুনলে মনে হতে পারে হয়তো এদের সাথে শেয়ালের কোন মিল রয়েছে। কিন্তু আসলে তা নয়। এদের গায়ের রং সম্ভবত লাল-কমলার মিশ্রণ হয়ে থাকে। এদেরকে সাধারণত উত্তর আমেরিকার দিকে দেখতে পাওয়া যায়।
সোয়াম্প স্প্যারো: গ্রীষ্মকাল শুরু হলে প্রজননের সময় এই পাখিগুলো নিজেদের জায়গা ছেড়ে সুদূর কানাডায় পাড়ি জমায়। এমনকি শীতকালে আমেরিকা, মেক্সিকো অঞ্চলেও এদের দেখতে পাওয়া যায়। এরা সাধারনত বন জঙ্গলে বাস করে।
সাদা চড়ুই: দেখতে অনেকটা অন্যান্য চড়ুই পাখির মতোই কিন্তু শীতকালে সাদা চড়ুই পাখির পরিমাণ বেশি দেখা যায়। এদের ঠোঁটের রং এবং শরীরের রং অন্যান্য পাখিদের তুলনায় কিছুটা আলাদা হয়ে থাকে।
৭/ চড়ুই পাখির প্রজননকাল
চড়ুই পাখি সাধারণত ৫ থেকে ৬টি ডিম পাড়ে।তাদের ডিম থেকে ছানা ফুটতে সর্বমোট ১৩ দিন সময় অতিবাহিত হয়। যখন চড়ুই পাখির প্রজনন কাল শুরু হয় তখন তারা শুকনা ঘাস, পালক, শুকনো কাঠি দিয়ে মানুষের ঘরের ছোটখাটো জায়গায় তাদের ঘর তৈরি করে।
৮/ চড়ুই পাখির বিলুপ্তির কারণ
আমাদের দেশ থেকে চড়ুই পাখি বিলুপ্তির অনেকগুলো কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রধান কিছু কারণ হচ্ছে- বন জঙ্গলে মানুষ যখন ঘুরতে যায় তখন পাখি শিকার করে যার ফলে পাখিরা তেমন একটা থাকতে চায় না। আরো একটি কারণ হচ্ছে- আমাদের দেশের গাছপালা বেশ কমে আসছে মানুষ গাছপালা কেটে ঘর-বাড়ি, বিল্ডিং, দালানকোঠা তৈরি করছে। গাছের অভাবে চড়ুই পাখি তার বাসা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়।
৯/ চড়ুই পাখি সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা
চড়ুই পাখি সম্পর্কে কিছু মানুষের ভুল ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করে চড়ুই পাখির মাংস খেলে মানুষের প্রজনন ক্ষমতা বা যৌন শক্তির ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আসলে বিষয়টি তা নয়। চড়ুই পাখিতে এমন কোন পুস্টি উপাদান নেই যা খেলে মানুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
১০/ চড়ুই পাখির বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট
চড়ুই পাখির বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যেমন- চড়ুই পাখির মাংস মুরগি মাংসের তুলনায় অনেকটা শক্ত হয়ে থাকে।অনেকেই মনে করে থাকেন চড়ুই পাখির মাংস শীতকালে খাওয়া উত্তম। চড়ুই পাখির মাংস হলুদ রং করে না খাওয়াই উত্তম। কারণ এর হাড্ডি যদি আমাদের পেটে চায় তাহলে আমাদের পিত্তথলিতে পাথর জন্ম নিতে পারে।
আশা করি, আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি চড়ুই পাখির দশটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারবেন।