- আমাদের গ্রাম সম্পর্কে ১০টি বাক্য:
- ১/ আমাদের গ্রামের নাম মুন্সিগঞ্জ
- ২/ পরিবর্তনশীল আবহাওয়া
- ৩/ মুন্সীগঞ্জের মোট জনসংখ্যা
- ৪/ মুন্সীগঞ্জের শিক্ষাব্যবস্থা
- ৫/ মুন্সীগঞ্জে বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক এলাকা রয়েছে
- আমাদের গ্রামের টংগিবাড়ী উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন হলো-
- আমাদের গ্রামের লৌহজং উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন আছে।
- গজারিয়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন সংখ্যা-
- সিরাজদিখান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন সংখ্যা-
- শ্রীনগর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন সংখ্যা-
- ৬/ মুন্সীগঞ্জের অর্থনৈতিক অবস্থা
- ৭/ মুন্সীগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
- ৮/ মুন্সীগঞ্জের শিল্প কারখানা
- ৯/ মুন্সীগঞ্জের বিখ্যাত খাবার
- ১০/ মুন্সীগঞ্জের বাজার
- Rk Raihan

আমাদের গ্রাম সম্পর্কে ১০টি বাক্য – আমাদের দেশের অধিকাংশ এলাকা গ্রাম দ্বারা বিস্তৃত। আমাদের দেশে এত পরিমাণ গ্রাম অঞ্চল রয়েছে যার নাম বলে শেষ করা যাবে না। গ্রাম আমাদের দেশের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।গ্রাম এমন একটি স্থান যেখানে গেলে মনে হবে এটি শহরের তুলনায় পুরোপুরি ভিন্ন।
গ্রামের পরিবেশ সকলের কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। কিন্তু এমন অনেকে আছেন যারা গ্রাম খুব ভালবাসেন। গ্রামের প্রতিটি বস্তু, গ্রামে ব্যায় করা মুহূর্ত অনেক বেশি ভালোবাসেন।
যদি আপনি গ্রামকে শহরের তুলনায় বেশি ভালোবেসে থাকেন তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনাকে অনেক আনন্দ দিবে বলে আশা করা যায়। আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আমাদের গ্রাম সম্পর্কে ১০টি বাক্য আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি।
আমাদের গ্রাম সম্পর্কে ১০টি বাক্য:
১/ আমাদের গ্রামের নাম মুন্সিগঞ্জ
আমাদের গ্রাম ঢাকা বিভাগের প্রশাসনিক অঞ্চল নামে পরিচিত। মুন্সিগঞ্জের পুরনো নাম হচ্ছে বিক্রমপুর। অনেক বছর পূর্বে মানুষ এই গ্রামটিকে বিক্রমপুর বলেই ডাকত। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষ এখন এই গ্রামটিকে মুন্সিগঞ্জ বলেই ডাকে।
১৯৮৪ সালের পহেলা মার্চ মুন্সিগঞ্জ নামক গ্রামটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর আয়তন হচ্ছে ৯৫৪.৯৬ বর্গকিলোমিটার (৩৬৮.৭১ বর্গমাইল)।
২/ পরিবর্তনশীল আবহাওয়া
আমাদের গ্রামের আবহাওয়া পরিবর্তনশীল। যখন বৃষ্টির দিন শুরু হয় প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়ে গ্রামের প্রতিটি স্থান নদীনালা, খাল-বিল জমি-জমা তলিয়ে যায়।
এমনকি যখন গ্রীষ্মকাল সিজন শুরু হয় তখন অনেক গরম তাপমাত্রার ফলে জমিতে খরা সৃষ্টি হয়। বছরের শেষের দিকে অথবা শুরুর দিকে যখন শীতকাল নেমে আসে তখন প্রচন্ড ঠান্ডা তাপমাত্রা সৃষ্টি হয়।তাপমাত্রা এতটাই ঠান্ডা থাকে যে চারদিকে কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
৩/ মুন্সীগঞ্জের মোট জনসংখ্যা
আমাদের গ্রামের মোট জনসংখ্যা যদি হিসাব করি তাহলে ১২,৯৩,৯৭২ জন মানুষ বাস করে। তার মধ্যে পুরুষ ৬৫৫৫৮৫ জন ও মহিলা ৬৩৮৩৮৭ জন।মুসলিম ১১৮১০১২ জন, হিন্দু ১১০৮০৪ জন , বৌদ্ধ ১৯২২ জন , খ্রিস্টান ১০৩ জন এবং অন্যান্য ধর্মের লোকজন ৩০৮ জন।
৪/ মুন্সীগঞ্জের শিক্ষাব্যবস্থা
আমাদের গ্রামের শিক্ষার হার বিবেচনা করলে দেখা যায় যে সর্বমোট ৬১.২০ পারসেন্ট শিক্ষিত মানুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে পুরুষের শিক্ষার হার-৬১.০৮% ও মহিলাদের শিক্ষার হার- ৫৯.১২%। আমাদের গ্রামে কলেজের সংখ্যা ১৬টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৮৮টি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৪৯টি, মাদ্রাসার সংখ্যা ২৯টি।
আমাদের গ্রামে আরো কয়েকটি ভালো মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলো হল- কে. কে গভঃ ইন্সটিটিউশন যা (১৯৪২) সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
আলবার্ট ভিক্টোরিয়া যতীন্দ্র মোহন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সীগঞ্জ যা ১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু ১৯৯১ সালে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ নামে নির্বাচিত হয়েছিল, মুন্সীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় যা (১৮৮৫) সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ।
এমনকি এখান থেকেই আমাদের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ শিক্ষা অর্জন করেছিলেন, মুন্সীগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় যেটি (১৯৬৮) সালে চালু হয়েছিল, সরকারি হরগঙ্গা কলেজ যা (১৯৩৮) সাল হতে পরিচালিত হচ্ছে, এছাড়াও রয়েছে সরকারি শ্রীনগর কলেজ ও রংমেহার উচ্চ বিদ্যালয়।
এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থাকার কারণে আমাদের গ্রামের মানুষগণ সুশিক্ষিত হয়ে গড়ে উঠতে পারছে। এমনকি কম খরচে সুশিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে।
৫/ মুন্সীগঞ্জে বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক এলাকা রয়েছে
আমাদের গ্রামের সর্বমোট ছয়টি উপজেলা রয়েছে। এই ছয়টি উপজেলার মধ্যে ৬৭ টি ইউনিয়ন আছে।
আমাদের গ্রামের মুন্সিগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন হলো-
- শিলই
- আধারা
- বাংলাবাজার
- পঞ্চসার
- রামপাল
- বজ্রযোগীনি
- চরকেওয়ার
- মোল্লাকান্দি
- মহাকালি
আমাদের গ্রামের টংগিবাড়ী উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন হলো-
- রংমেহার
- পাঁচগাও
- কাঠাদিয়া-শিমুলিয়া
- সোনারং-টংগিবাড়ী
- বেতকা
- আব্দুল্লাপুর
- যশলং
- কামারখাড়া
- দিঘিরপাড়
- হাসাইল-বানারী
- আউটশাহী
- আড়িয়ল
- বালিগাঁও
আমাদের গ্রামের লৌহজং উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন আছে।
- মেদিনীমন্ডল
- খিদিরপাড়া
- বৌলতলী
- কলমা
- গাওদিয়া
- বেজগাঁও
- কনকসার
- লৌহজং-তেউটিয়া
- কুমারভোগ
- হলদিয়া
গজারিয়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন সংখ্যা-
- টেংগারচর
- বালুয়াকান্দি
- ভবেরচর
- বাউশিয়া
- গজারিয়া
- হোসেন্দী
- ইমামপুর
- গুয়াগাছিয়া
সিরাজদিখান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন সংখ্যা-
- চিত্রকোট
- শেখর নগর
- রাজানগর
- কেয়াইন
- বাসাইল
- রশুনিয়া
- লতব্দী
- বালুচর
- ইছাপুর
- বয়রাগাদি
- মালখানগর
- মধ্যপাড়া
- জৈনসার
- কোলা
শ্রীনগর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন সংখ্যা-
- শ্রীনগর
- শ্যামসিদ্ধি
- ষোলঘর
- কুকুটিয়া
- তন্তর
- আটপাড়া
- রাঢ়ীখাল
- ভাগ্যকুল
- বাঘড়া
- কোলাপাড়া
- পাটাভোগ
- হাসাড়া
- বীরতারা
- বাড়ৈখালী
৬/ মুন্সীগঞ্জের অর্থনৈতিক অবস্থা
আমাদের গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান উৎস হচ্ছে কৃষিকাজ করা। যুগ যুগ ধরেই আমাদের গ্রামের জনগণরা কৃষিকাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে এবং অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি সাধন করছে।
বর্তমানে আগের তুলনায় কৃষি কাজের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে কারণ কৃষকরা নতুন নতুন যন্ত্রপাতি ও জমি সেচ যন্ত্র ব্যবহার করে কৃষি কাজে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে।
৭/ মুন্সীগঞ্জের দর্শনীয় স্থান
আমাদের গ্রামে এমন কিছু সুন্দর সুন্দর এবং আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে যেখানে ভ্রমণ না করলে আপনি তার সৌন্দর্য ও মর্যাদা সম্পর্কে ধারণা পাবেন না। মুন্সীগঞ্জে যারা বসবাস করছে তারা বন্ধের দিনগুলোতে অথবা অবসর সময়ে এসকল দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করে থাকে। দর্শনীয় স্থানগুলো হলো-
- ধলেশ্বরী নদী
- বিক্রমপুর বিহার
- রংমেহার ক্লাব
- পদ্মা সেতু
- পদ্মার চর
- নয়াগাঁও বেরিবাধ
- জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্মস্থান
- অতীশ দীপঙ্করের জন্মস্থান
- ইদ্রাকপুর কেল্লা
- রাজা বল্লাল সেন ও হরিশচন্দ্রের দীঘি
- নাটেশ্বর দেউলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
- রাজা শ্রীনাথের বাড়ি
- ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি
- রামপালে বাবা আদম মসজিদ
- হাসারার দরগা
- সোনারং জোড়া মন্দির
- শ্যামসিদ্ধির মঠ
- শুলপুরের গির্জা
- মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট
- ধলেশ্বরী সকার কিংস ক্লাব
৮/ মুন্সীগঞ্জের শিল্প কারখানা
আমাদের গ্রামে আট ধরনের শিল্প কারখানা অথবা ফ্যাক্টরি রয়েছে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখছে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক সেই ফ্যাক্টরি গুলো কি কি।
- হিমাগার ফ্যাক্টরির সংখ্যা ৬৭টি
- সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর সংখ্যা ১১টি
- লবণ ফ্যাক্টরীর সংখ্যা ৩টি
- কাগজ ফ্যাক্টরীর সংখ্যা ৩টি
- বসুন্ধরা টিস্যু ফ্যাক্টরীর সংখ্যা ১টি
- জাহাজ নির্মাণ শিল্প কারখানা ৬টি
- ম্যাচ ফ্যাক্টরী রয়েছে ৩টি
- আঁঠা ফ্যাক্টরী আছে ১টি
৯/ মুন্সীগঞ্জের বিখ্যাত খাবার
মুন্সিগঞ্জের বিখ্যাত খাবারের মধ্যে রয়েছে ভাগ্যকুলের মিষ্টি। এটি পছন্দ করেনা এমন কোনো মানুষকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
এই দোকানের মিষ্টি, ছানা, সন্দেস, রসগোল্লা এতটাই বিখ্যাত যে অতিথি আপ্যায়নে শহর থেকে গ্রামে যাওয়ার পথে এমনকি গ্রাম থেকে শহরে যাওয়ার পথেও লোকজন ভাগ্যকুলের মিষ্টির আইটেম কিনে নিয়ে যায়। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অতিথি আপ্যায়নেও ভাগ্যকুলের মিষ্টি ব্যবহৃত হয়।
১০/ মুন্সীগঞ্জের বাজার
আমাদের গ্রামে এমন কিছু বাজার রয়েছে যেখানে সকল প্রকার তাজা শাকসবজি, ফলমূল, মাছ- মাংস পাওয়া যায়।এমনকি শহর থেকে যখন লোকজনরা আমাদের গ্রামের দিকে আসে মাঝে মাঝে তারাও তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী এখান থেকে বাজার করে নিয়ে যায়। কারণ আমাদের গ্রামের এই বাজারগুলোতে কম খরচে ভালো বাজার করা যায়।
আমাদের গ্রামের মানুষগুলো খুবই সহজ সরল। সকলেই একে অপরের সাথে মিলেমিশে বসবাস করছে। আশা করি, এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আমাদের গ্রাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। আপনি চাইলে আপনার গ্রাম সম্পর্কেও লিখে কমেন্ট বক্সে শেয়ার করতে পারেন।